লজ্জাস্থান হেফাজত করার সাধারণ হুকুম
﴿إِلَّا
عَلَىٰ أَزْوَاجِهِمْ أَوْ مَا مَلَكَتْ
أَيْمَانُهُمْ فَإِنَّهُمْ غَيْرُ مَلُومِينَ﴾ (নিজেদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে)
﴿فَمَنِ
ابْتَغَىٰ وَرَاءَ ذَٰلِكَ فَأُولَٰئِكَ
هُمُ الْعَادُونَ﴾ (নিজেদের
স্ত্রীদের ও অধিকারভুক্ত বাঁদীদের
ছাড়া, এদের কাছে (হেফাজত
না করলে) তারা তিরষ্কৃত
হবে না)
লজ্জাস্থান
হেফাজত করার সাধারণ হুকুম
থেকে দু'ধরনের স্ত্রীলোককে
বাদ দেয়া হয়েছে।
এক, স্ত্রী। দুই
----------। স্ত্রী (-----) শব্দটি আরবী ভাষার
পরিচিত ব্যবহার এবং স্বয়ং কুরআনের
সুস্পষ্ট বক্তব্য অনুযায়ী কেবলমাত্র এমনসব নারী সম্পর্কে
বলা হয় যাদেরকে যথারীতি
বিবাহ করা হয়েছে এবং
আমাদের দেশে প্রচলিত ''স্ত্রী''
শব্দটি এরি সমার্থবোধক।
আর ----------- বলতে যে বাঁদী
বুঝায় আরবী প্রবাদ ও
কুরআনের ব্যবহার উভয়ই তার সাক্ষী। অর্থাৎ
এমন বাঁদী যার ওপর
মানুষের মালিকানা অধিকার আছে।
এভাবে এ আয়াত পরিষ্কার
বলে দিচ্ছে বিবাহিতা স্ত্রীর
ন্যায় মালিকানাধীন বাঁদীর সাথেও যৌন
সম্পর্ক স্থাপন করা বৈধ্য
এবং বৈধতার ভিত্তি বিয়ে
নয় বরং মালিকানা।
যদি এ জন্যও বিষেয়
শর্ত হতো তাহলে একে
স্ত্রী থেকে আলাদা করেও
বর্ণনা করার প্রয়োজন ছিল
না। কারণ
বিবাহিত হলে সে ও
স্ত্রীর পর্যায়ভূক্ত হতো। বর্তমানকালের
কোন কোন মুফাসসির যারা
বাঁদীর সাথে যৌন সম্ভোগ
স্বীকার করেননি। তারা
সূরা নিসার (২৫ আয়াত)
----- আয়াতটি থেকে যুক্তি আহরণ
করে একথা প্রমাণ করতে
চান যে, বাঁদীর সাথে
যৌন সম্ভোগও কেবলমাত্র বিয়ের মাধ্যমেই করা
যেতে পারে। কারণ
সেখানে হুকুম দেয়া হয়েছে,
যদি আর্থিক দুরবস্থার কারণে
তোমরা কোন স্বাধীন পরিবারের
মেয়েকে বিয়ে করার ক্ষমতা
না রাখো তাহলে কোন
বাঁদীকে বিয়ে করো।
কিন্তু এসব লোকের একটি
অদ্ভুত বৈশিষ্ট লক্ষ করার মতো। এরা
একই আয়াতের একটি অংশকে
নিজেদের উদ্দেশ্যের পক্ষে লাভজনক দেখতে
পেয়ে গ্রহণ করে নেন,
আবার সে একই আয়াতের
যে অংশটি এদের উদ্দেশ্যে
বিরোধী হয় তাকে জেনে
বুঝে বাদ দিয়ে দেন।
''কাজেই এ বাঁদীদের সাথে
বিবাহ বন্ধণে আবব্ধ হয়ে
যাও এদের অভিভাবকদের অনুমতিক্রমে
এবং এদেরকে পরিচিত পদ্ধতিতে
মোহরানা প্রদান করো।''
এ শব্দগুলো পরিষ্কার বলে দিচ্ছে, এখানে
বাঁদীর মালিকের বিষয় আলোচনার বিষয়বস্তু
নয় বরং এমন ব্যক্তির
বিষয় এখানে আলোচনা করা
হচ্ছে, যে স্বাধীন মেয়ে
বিয়ে করার ব্যয় ভার
বহন করার ক্ষমতা রাখে
না এবং এ জন্য
অন্য কোন ব্যক্তির মালিকানাধীন
বাঁদীকে বিয়ে করতে চায়। নয়তো
যদি নিজেরই বাঁদীকে বিয়ে
করার ব্যাপার হয় তাহলে তার
এ ''অভিভাবক'' কে হতে পারে
যার কাছ থেকে তার
অনুমতি নেবার প্রয়োজন হয়৷
কিন্তু কুরআনের সাথে কৌতুককারীরা কেবলমাত্র
------ কে গ্রহণ করেন অথচ
তার পরেই যে ----- এসেছে
তাকে উপেক্ষা করেন। তাছাড়াও
তারা একটি আয়াতের এমন
অর্থ বের করেন যা
একই বিষয়বস্তু সম্পর্কিত কুরআনের অন্যান্য আয়াতের সাথে সংঘর্ষশীল। কোন
ব্যক্তি যদি নিজের চিন্তাধারার
নয় বরং কুরআন মজীদের
অনুসরণ করতে চায় তাহলে
তাকে অবশ্যি সূরা নিসার
৩-৩৫, সূরা আহযাবের
৫০-৫২ এবং সূরা
মা'আরিজের ৩০ আয়াতকে
সূরা মুমিনূনের এ আয়াতের সাথে
মিলিয়ে পড়তে হবে।
এভাবে সে নিজেই এ
ব্যাপারে কুরআনের বিধান কি তা
জানতে পারবে। ( এ
বিষয়ে আরো বেশী বিস্তারিত
জানতে হলে পড়ুন তাফহীমুল
কুরআন, সূরা নিসা, ৪৪টীকা;
তাফহীমাত (মোদূদী রচনাবলী) ২য়
খণ্ড ২৯০ থেকে ৩২৪
পৃ: এবং রাসায়েল ও
মাসায়েল ১ম খণ্ড, ২৪
থেকে ৩৩৩ পৃষ্ঠা) ''তবে যারা এর বাইরে আরো কিছু চাইবে তারাই হবে সীমালংঘণকারী''-এ বাক্যটি ওপরে উল্লেখিত দু'টি বৈধ আকার ছাড়া যিনা বা সমকাম অথবা পশু-সংগম কিংবা কাম প্রবৃত্তি চরিতার্থ করার জন্য অন্য যাই কিছু হোক না কেন সবই হারাম করে দিয়েছে। একমাত্র হস্তমৈথুনের (Masturbation) ব্যাপারে ফকীহগণের মধ্যে মতবিরোধ আছে। ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল একে জায়েয গণ্য করেন। ইমাম মালেক ও ইমাম শাফেঈ একে চূড়ান্ত হারাম বলেন। অন্যদিকে হানাফীদের মতে যদিও এটি হারাম তবুও তারা বলেন, যদি চরম মুহূর্তে কখনো কখনো এ রকম কাজ করে বসে তাহলে আশা করা যায় তা মাফ করে দেয়া হবে।