আল্লাহ ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই
আল্লাহ
এমন এক চিরঞ্জীব ও
চিরন্তন সত্তা যিনি সমগ্র
বিশ্ব-জাহানের দায়িত্বভার বহন করছেন , তিনি
ছাড়া আর কোন ইলাহ
নেই অর্থাৎ মূর্খতা নিজেদের কল্পনা ও ভাববাদিতার
জগতে বসে যত অসংখ্য
উপাস্য, ইলাহ ও মাবুদ
তৈরী করুক না কেন
আসলে কিন্তু সার্বভৌম ক্ষমতা
প্রতিপত্তি ও শাসন কর্তৃত্ব
নিরংকুশভাবে একমাত্র সেই অবিনশ্বর সত্তার
অংশীভূত, যাঁর জীবন কারো
দান নয় বরং নিজস্ব
জীবনী শক্তিকে যিনি স্বয়ং জীবিত
এবং যাঁর শক্তির ওপর
নির্ভর করে গড়ে উঠেছে
এই বিশ্ব-জাহানের সমগ্র
ব্যবস্থাপনা। নিজের
এই বিশাল সীমাহীন রাজ্যের
যাবতীয় শাসন কর্তৃত্ব ও
ক্ষমতার একচ্ছত্র মালিক তিনি একাই। তাঁর
গুণাবলীতে দ্বিতীয় কোন সত্তার অংশীদারীত্ব
নেই। তাঁর
ক্ষমতা, কর্তৃত্ব ও অধিকারেও নেই
দ্বিতীয় কোন শরীক।
কাজেই তাঁকে বাদ দিয়ে
বা তার সাথে শরীক
করে পৃথিবীতে বা আকাশে কোথাও
আর কাউকে মাবুদ ইলাহ
ও প্রভু বানানো হলে
তা একটি নিরেট মিথ্যা
ছাড়া আর কিছুই হয়
না। এভাবে
আসলে সত্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ
ঘোষণা করা হয়।
তিনি
ঘুমান না এবং তন্দ্রাও
তাঁকে স্পর্শ করে না,মহান
ও সর্বশক্তিমান আল্লাহর সত্তাকে যারা নিজেদের দুর্বল
অস্তিত্বের সদৃশ মনে করে
এবং যাবতীয় মানবিক দুর্বলতাকে
আল্লাহর সাথে সম্পর্কিত করে,
এখানে তাদের চিন্তা ও
ধারণার প্রতিবাদ করা হয়েছে ।
যেমন বাইবেলের বিবৃতি মতে, আল্লাহ
ছয় দিনে পৃথিবী ও
আকাশ তৈরী করেন এবং
সপ্তম দিনে বিশ্রাম নেন
পৃথিবী
ও আকাশে যা কিছু
আছে সবই তাঁর,অর্থাৎ তিনি
পৃথিবী ও আকাশের এবং
এ দু'য়ের মধ্যে
যা কিছু আছে সবকিছুর
মালিক। তাঁর
মালিকানা, কর্তৃত্ব ও শাসন পরিচালনায়
কারো এক বিন্দু পরিমাণও
অংশ নেই। তাঁর
পরে এই বিশ্ব-জাহানের
অন্য যে কোন সত্তার
কথাই চিন্তা করা হবে
সে অবশ্যই হবে এই
বিশ্ব-জগতের একটি সৃষ্টি
। আর বিশ্ব-জগতের সৃষ্টি অবশ্যি
হবে আল্লাহর মালিকানাধীন এবং তাঁর দাস
। তাঁর অংশীদর
ও সমকক্ষ হবার কোন
প্রশ্নই এখানে ওঠে না
কে
আছে তাঁর অনুমতি ছাড়া
তাঁর কাছে সুপারিশ করবে,এখানে
এক শ্রেণীর মুশরীকদের চিন্তার প্রতিবাদ করা হয়েছে, যারা
বযর্গ ব্যক্তিবর্গ, ফেরেশস্তা বা অন্যান্য সত্তা
সম্পর্কে এই ধারণা পোষণ
করে যে, আল্লাহর ওখানে
তাদের বিরাট প্রতিপত্তি ।
তারা যে কথার ওপর
অটল থাকে, তা তারা
আদায় করেই ছাড়ে।
আর আল্লাহর কাছ থেকে তারা
যে কোন কার্যোদ্ধার করতে
সক্ষম। এখানে
তাদেরকে বলা হচ্ছে, আল্লাহর
কাছ থেকে তারা যে
কোন কার্যোদ্ধার করতে সক্ষম।
এখানে তাদেরকে বলা হচ্ছে, আল্লাহর
ওখানে প্রতিপত্তির তো কোন প্রশ্নই
ওঠে না, এমনকি কোন
শ্রেষ্ঠতম পয়গম্বর এবং কোন নিকটতম
ফেরেশতাও এই পৃথিবী ও
আকাশের মালিকের দরবারে বিনা অনুমতিতে
একটি শব্দও উচ্চারণ করার
সাহস রাখে না।
যা
কিছু মানুষের সামনে আছে তা
তিনি জানেন এবং যা
কিছু তাদের অগোচরে আছে
সে সম্পর্কে তিনি অবগত ৷
তিনি নিজে যে জিনিসের
জ্ঞান মানুষকে দিতে চান সেটুকু
ছাড়া তাঁর জ্ঞানের কিছুই
তারা আয়ত্ব করতে পারে
না,এই সত্যটি প্রকাশের পর
শিরকের ভিত্তির ওপর আর একটি
আঘাত পড়লো। ওপরের
বাক্যগুলোয় আল্লাহর অসীম কর্তৃত্ব ও
তার সাথে সম্পর্কিত ক্ষমতাবলী
সম্পর্কে একটা ধারণা পেশ
করে বলা হয়েছিল, তাঁর
কর্তৃত্বর স্বতন্ত্রভাবে কেউ শরীক নেই
এবং কেউ নিজের সুপারিশের
জোরে তাঁর সিদ্ধান্তের ওপর
প্রভাব বিস্তার করার ক্ষমতাও রাখে
না। অতপর
এখানে অন্যভাবে বলা হচ্ছে, অন্য
কেউ তাঁর কাজে কিভাবে
হস্তক্ষেপ করতে পারে যখন
তার কাছে এই বিশ্ব-জাহানের ব্যবস্থাপনা এবং এর অন্তর্নিহিত
কার্যকারণ ও ফলাফল বুঝার
মতো কোন জ্ঞানই নেই৷
মানুষ, জিন ফেরেশতা বা
অন্য কোন সৃষ্টিই হোক
না কেন সবার জ্ঞান
অপূর্ণ ও সীমিত।
বিশ্ব-জাহানের সমগ্র সত্য ও
রহস্য কারো দৃষ্টিসীমার মধ্যে
নেই। তারপর
কোন একটি ক্ষুদ্রতর অংশেও
যদি কোন মানুষের স্বাধীন
হস্তক্ষেপ অথবা অনড় সুপারিশ
কার্যকর হয় তাহলে তো
বিশ্ব-জগতের সমগ্র ব্যবস্থাপনাই
ওলট-পালট হয়ে যাবে। বিশ্ব-জগতের ব্যবস্থাপনা তো
দূরের কথা মানুষ নিজের
ব্যক্তিগত ভালোমন্দ বুঝারও ক্ষমতা রাখে
না। বিশ্ব-জাহানের প্রভু ও পরিচালক
মহান আল্লাহই এই ভালোমন্দের পুরোপুরি
জ্ঞান রাখেন। কাজেই
এ ক্ষেত্রে জ্ঞানের মূল উৎস মহান
আল্লাহর হিদায়াত ও পথনির্দেশনার ওপর
আস্থা স্থাপন করা ছাড়া
মানুষের জন্য দ্বিতীয় আর
কোন পথ নেই