মহান আল্লাহ তায়া’লা ইরশাদ করেন

الذين يقيمون الصلوة ومما رزقنهم ينفقون- اولئك هم المومنون حقا- لهم درجت عند ربهم ومغفرة ورزق كريم-

‘‘যারা নামায কায়েম করে এবং আমার দেয়া রিযিক থেকে ব্যয় করে। তারা হল সত্যিকার ঈমানদার। তাদের জন্য তাদের প্রতিপালকের কাছে রয়েছে মর্যাদা, ক্ষমা ও সম্মান জনক রিযিক। [ সূরা আনফাল-৩-৪]

Pages

জান্নাতী এক সাহাবীর আমল

হযরত আনাস ইবনে মালেক রা. বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে বসা ছিলাম। তিনি এরশাদ করলেন, এখনই তোমাদের নিকট একজন বেহেশতী লোক আসবে। এমন সময় একজন আনসারী সাহাবি আসলেন, তাহার নাম হযরত সাদ বিন ওয়াক্কাস রা.। যার দাড়ি হতে অজুর পানির ফোটা টপকিয়ে পড়তেছিল এবং তিনি জুতা বাম হাতে নিয়ে রেখে ছিলেন। দ্বিতীয় দিনও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐ কথাই বললেন এবং সেই আনসারি ঐ অবস্থাতেই আসলেন, যে অবস্থাতে আমরা প্রথমে দেখেছিলাম। তৃতীয় দিন আবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐ কথাই বললেন এবং সেই আনসারি সাহাবি ঐ প্রথম অবস্থাতেই আসলেন। যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (মজলিস হইতে) উঠলেন, তখন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রা. সেই আনসারির পিছনে গেলেন এবং তাঁকে বললেন, আমার পিতার সাথে ঝগড়া হয়েছে। সে কারণে আমি কসম খেয়েছি যে, তিন দিন আমি বাড়িতে যাব না। যদি আপনি ভালো মনে করেন তবে আমাকে আপনার এখানে তিন দিন অবস্থান করতে দিন। তিনি বললেন, বেশ ভালো। হযরত আনাস রা. বলেন, হযরত আব্দুল্লাহ রা. বর্ণনা করেন যে, আমি তার নিকট তিন রাত্র অতিবাহিত করেছি। আমি তাকে রাত্রে কোন ইবাদত করতে দেখিনি। তবে যখন রাত্রে তার চোখ খুলে যেত এবং বিছানার উপর পার্শ্ব বদলাতেন তখন আল্লাহ তাআলার যিকির করতেন ও আল্লাহু আকবার বলতেন। এইভাবে ফযরের নামাযের জন্য বিছানা  হতে উঠতেন। আরেকটি বিষয় এও ছিল যে, আমি তাঁর নিকট হতে ভাল ছাড়া অন্য কিছু শুনি নাই।
যখন তিন রাত্র অতিবাহিত হয়ে গেল এবং আমি তাঁর আমল আমার নিকট সাধারণ মনে হল। এবং আমি আশ্বর্যবোধ করতেছিলাম যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর জন্য এত বড় সুসংবাদ দিয়েছেন অথচ তার কোন খাস আমল তো নাই! তখন আমি তাকে বলিলাম, হে আল্লাহর বান্দা! আমার এবং আমার পিতার মধ্যে না কোন অসন্তুষ্টি হয়েছে এবং না  কোন বিচ্ছেদ হয়েছে। তবে ঘটনা এই যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে (আপনার সম্পর্কে ) তিনবার এই এরশাদ করতে শুনেছিÑএখনই তোমাদের নিকট একজন বেহশতি লোক আসবে। অতঃপর তিনবারই আপনি আসছেন। তখন আমি ইচ্ছা করলাম যে, আমি আপনার এখানে থেকে আপনার বিশেষ আমল দেখব। যাতে (ঐ আমল গুলির ব্যাপারে) আপনার পদাঙ্ক অনুসরণ করে চলি। আমি আপনাকে  বেশি আমল করতে দেখি নাই। (এখন আপনি বলুন) আপনার এই বিশেষ আমল কোনটি যার কারণে আপনি এই মর্তবায় পৌঁছেছেন? যা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপনার সম্পর্কে এরশাদ করেছেন। ঐ অনুসারী বললেন, আমার কোন খাছ আমল তো নাই। এসব আমলই আছে যা তুমি দেখেছ। হযরত আব্দুল্লাহ রা. বলেন, আমি একথা শুনে রওনা দিলাম। যখন আমি ফিরে চললাম তখন তিনি আমাকে ডাকলেন এবং বললেন, আমার কাছে আরো দুটি আমল আছে। ১. আমি কারো গীবত করি না। ২. এবং আমি কাহার প্রতি হিংসা করি না। হযরত আব্দুল্লাহ রা. বলেন, এটাই সেই আমল, যার কারণে আপনি ঐ মর্তবায় পৌঁছেছেন। আর ইহা এমন আমল যা আমরা করতে পারি না।